স্পোর্টস ডেস্ক: সম্প্রতি শেষ হয়েছে ক্লাব ফুটবলের ২০২২-২৩ মৌসুম। এরই মধ্যে জাতীয় দলের হয়ে আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ খেলতে ফুটবলাররা ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। তেমনই একটি ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল ইউরোপীয় জায়ান্ট জার্মানি ও ইউক্রেন। তবে কাতার বিশ্বকাপে ছন্দহীন বিদায় নেওয়া সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা এই ম্যাচে কোনোমতে রক্ষা পেয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে প্রথমবারের মতো জিততে জিততেও তা আর হয়ে ওঠেনি ইউক্রেনের। ম্যাচটি ৩-৩ গোলে ড্র হয়েছে।
টানা দুই বিশ্বকাপে গ্রুপপর্ব থেকে বিদায় নেওয়া জার্মানি যেন নিজেদের হারিয়ে খুঁজছে। কাতার বিশ্বকাপের পর তারা প্রথম প্রীতি ম্যাচে জয় দিয়ে শুরু করেছিল। কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচে গিয়ে তারা ধাক্কা খায় বেলজিয়ামের কাছে। ৬৯ বছর পর বেলজিয়ামের কাছে জার্মানি হারের স্বাদ পায়। ইউক্রেনের কাছেও একই ফল দেখার শঙ্কায় ছিল তারুণ্যনির্ভর দলটি। তবে শেষপর্যন্ত তারা অল্পের জন্য বেঁচে গেছে।
সোমবার (১২ জুন) ঘরের মাঠ ব্রেমেনে নিজেদের হাজারতম ম্যাচে নেমেছিল জার্মানি। এদিন শুরুতে এগিয়ে গেলেও পরবর্তীতে স্বাগতিকরা ছন্দ হারায়। ম্যাচের মাত্র দ্বিতীয় মিনিটেই প্রতিপক্ষের দেওয়া উপহারের সুযোগটি নষ্ট করেন জার্মান ফরোয়ার্ড নিকলাস ফুলক্রুগ। এক ইউক্রেন ডিফেন্ডার নিজেদের বক্সে বল তুলে দেন ফুলক্রুগের পায়ে, তবে ওয়ান-অন-ওয়ানে তিনি বাইরে মেরে দেন।
তবে গোলের জন্য তাদের বেশিক্ষণ অপেক্ষায় থাকতে হয়নি। ষষ্ঠ মিনিটে বক্সের ভেতর থেকে মারিয়াস উলফের শটে বল ফুলক্রুগের পায়ে লেগে জালে জড়ায়। কিন্তু সেই লিড বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেনি স্বাগতিকরা। ১৮তম মিনিটে সমতা ফেরে ইউক্রেন। সতীর্থের পাস ধরে বক্সে ঢুকে ডান পায়ের শটে দূরের পোস্ট দিয়ে ঠিকানা খুঁজে নেন ভিক্টর শিয়ানকভ। যদিও শুরুতে সেটি অফসাইডে বাতিলের সম্ভাবনা জেগেছিল, পরে ভিএআরের কল্যাণে গোলের সিদ্ধান্ত দেন রেফারি।
এরপর সফরকারী ইউক্রেন যেন আরও উজ্জীবিত। ২২ মিনিটের মাথায় তার ফলও পেয়ে যায়। জার্মান দর্শকদের স্তব্ধ করে দিয়ে তারা আক্রমণ শাণাতে থাকে, কিন্তু তাদের পা থেকে এবার গোল আসেনি। বক্সের ভেতর ইউক্রেন মিডফিল্ডার মাদ্রিচের দুর্বল শট নিলেও, সেটি অ্যান্টোনিও রুডিগারের পায়ে লেগে দিক পাল্টে জালে জড়ায়। তার আত্মঘাতী গোলই লিড এনে সফরকারীদের। বিরতিতে যাওয়ার আগমুহূর্তে সমতায় ফিরতে পারত জার্মানি, কিন্তু লেরয় সানের নেওয়া ফ্রি-কিক ক্রসবার কাঁপিয়ে ফিরে আসে।
৫৬তম মিনিটে নিজেদের মারাত্মক ভুলে জার্মানির ঘুরে দাঁড়ানোর পথ আরও কঠিন হয়ে যায়। সতীর্থের ব্যাক-পাস বক্সে নিয়ন্ত্রণে নিতে ব্যর্থ হন মাথিয়াস গিন্টার। তার থেকে বল দখলে নিয়ে আর্তেম দভবিক পাস দেন পাশেই থাকা শিয়ানকভকে। গোলরক্ষক সামনে এগিয়ে যাওয়ায় ফাঁকা জালে বল পাঠান জিরোনার এই ২৫ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড।
৮৩তম মিনিটে জার্মানদের হয়ে ব্যবধান কমান দ্বিতীয়ার্ধে বদলি নামা কাই হাভার্টজ। রুডিগারের উঁচু করে বাড়ানো বল হেডে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিখুঁত শটে জালে পাঠান তিনি। এর পরের গোলেও অবদান আছে তরুণ হাভার্টজের। নির্ধারিত সময়ের এক মিনিট বাকি থাকতেই তিনি পেনাল্টি আদায় করে নেন। সেখান থেকে সফল স্পট কিকে সমতা টানেন জসুয়া কিমিচ।
ইউক্রেন স্মরণীয় এক জয়ের আশা জাগালেও, অল্পের জন্য বিব্রতকর এক পরাজয় থেকে রক্ষা পেয়েছে জার্মানি।